শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৮

আজ কোন কবিতা নেই

চাঁদের জোছনা চুরি গেছে আজ!
বিষন্ন হাওয়ায় ভেসে আসা,
সন্ন্যাসী চাঁদের আর্তনাদের শব্দ শুনে,
ঘুম ঘুম চোখে কেটে যাবে
এমন গ্রহণ লাগা শাওনের রাত।

চন্দ্রাহত আমি শব্দগুলো ছুঁড়ে ফেলে,
হৃদয়ক্ষরণের তীব্রতা নিয়ে
ফিরে যাবো বাড়ি, ভোরের আগেই।
প্রাপকের ঘর শূন্য পড়ে রবে
চেনা অভ্যস্ততা খুঁজে পাইনি বলে।

লেখার খাতার প্রিয় পৃষ্ঠাগুলো
তুমুল টানাপোড়েনের সংসারে,
আজ ভালোবাসা খুঁজে নেবে,
রাস্তায় পড়ে থাকা ঝালমুড়ির ঠোঙায়!
হয়তো তার চোখেই পড়বে না!
চোখের কাজলে লিখে রাখা কথাগুলো...
আজ কোন কবিতা নেই,
তাই, নীরবতাই হোক কথা বিনিময়ের ভাষা!

শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮

আকাশগঙ্গার অপেক্ষায়

তোমার রুপোলী রোদ্দুর আজ সূর্য ধোয়া যেন!
ছুঁলেই, অনুযোগের তীব্রতায় পুড়ে ছাই।
উত্তরের জানালা গলে দূর থেকে,
হাওয়ায় ভেসে আসে স্বপ্ন পোড়ার ধোঁয়াটে গন্ধ!
যেন কিছুকাল আগেই মৃত্যু হওয়া
সুখ স্বপ্নের, শেষকৃত্য সম্পন্ন করে গেছে সাঁড়াশি আঙুল।
বেলা বাড়ে...।
শূন্যতায় অসাড় হয়ে আসা এই আমার
বাড়ি ফেরা হয় না, কারো শিরোনামে।
নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর গল্পগুলো তাই,
বেমালুম তুলে রাখি, আকাশগঙ্গার অপেক্ষায়।

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১৮

যদি ফেরাতে না চাও

যদি ফেরাতে না চাও,
তবে সীমানা এঁকে রেখে যেও।
একদিন...
'সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ' বাক্যে
ঠিকই অভ্যস্ত হয়ে যাবো।

হাতবদল

উড়ে যাওয়া শালিকের ডানায় ভর করে,
আবার যদি কোনদিন সকাল আসে।
কাঁচপোকাদের কাছে জমিয়ে রাখা
কথাগুলো ফেরত চাইবো সেদিন।
অতন্দ্রিলা রাত্রির কাছ থেকে
চেয়ে নেবো কিছুটা সময়।
জোনাকির নরম আলোয়,
পাল্টে যাওয়া সময়ের হাতবদল হবে সেদিন!

সোমবার, ৯ জুলাই, ২০১৮

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা

একদিন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হয়ে,
তোমার শহরে ধরা দেবো।
মোহময় বাঁশির সুরে
নিংড়ে নেবো হৃদয়ের সবটুকু দুঃখ।
তারপর তোমার কাছে চেয়ে বসবো হৃদয়টুকু।
তুমি দিতে অস্বীকৃতি জানাতেই,
ফের মাতাল করা সুরে,
ও হৃদয়ের, এক আরণ্যক ভালোবাসা লুণ্ঠন করে
উধাও হবো অচিনপুরের পথে।
ভালোবাসাহীন একাকীত্বে ছেয়ে যাওয়া হৃদয়ের সাথে,
তীব্র বোঝাপড়ায় ব্যস্ত থাকবে তুমি সেদিন!

শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০১৮

সে কী তুমি

নিয়ন আলোর এই রাজপথে,
জোনাকিরাও আজ দাবী তোলে
তোমাকে চাই, তোমাকে চাই।
হৃদয় সীমান্তের পথ ধরে,
নিখোঁজ হওয়ার বার্তা হঠাৎ
কে পাঠালো আমায়!
শূন্যতা ঢেকে প্রাপ্তির জলে
কে ভেজালো স্বপ্নভূমি?
সে কী তুমি?
একান্তই আমার সম্ভাব্য তুমি।

মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮

স্মৃতির অ্যালবাম

স্মৃতির অ্যালবাম ছেড়ে
অবসরে একদিন এসো,
উচ্ছন্নে যাক পৃথিবী
তুমি শুধু আমায় ভালোবেসো।
অভিমানী মেঘমালা খেলবে
আষাঢ়ের সিক্ত উঠোনে,
আমি তখন চেয়ে নেবো
তোমায় উষ্ণ অভ্যর্থনে।

শুক্রবার, ১৫ জুন, ২০১৮

অনুভব

অকালে শ্রাবণ নেমে আসে
আমার চৈত্রমাসে,
হয় না আঁকা তোমার ছবি
ভিজে যাওয়া সবুজ ঘাসে।
আমি জানালা খুলে দেখি,
মুছে যায় প্রিয় রঙ সব।
রাত শেষে যার নাম দিয়েছি ভোর,
সে কী বোঝে, শেষ বিকেলের অনুভব!

শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮

ধূসর রাত

নীল মেঘ হতে গিয়ে আমি -
ধূসর রাত হয়েই বাড়ি ফিরলাম!
ভাবনার পালে, ইচ্ছের ভেলা ভাসানোর
স্বপ্নগুলো হয়তো বৃথাই ছিলো।
তা না হলে - ঐ চোখের ব্যালকনিতে
ঠাঁই পাওয়া যেত নির্দ্বিধায়।

মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

মাধ্যাকর্ষণ

অরুণিমা বিকেলের গল্প ছুঁয়ে
জমে আমার দু'চোখে অভিমান,
রাতের আকাশ থেকে খসে পড়া তারা
কেড়ে নেয় প্রিয় স্মৃতির ঘ্রাণ।
তুমিও তো সেই খসে পড়া
তারাদেরই একজন!
বাঁধন ছিঁড়ে তোমায় টানে
অন্য পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ!

ঘুম পালানো রাত্রিতে ছিলো
কথা জমানোর কথা,
খুব যতনে, সঙ্গোপনে সেথায়
ছুঁয়ে দেয় নীরবতা।
ভাবনা বিচ্যুতির দৃশ্যটা ক্যানভাসে
এঁকে দেয় কেউ তখন!
তুমিও তো সেই খসে পড়া
তারাদেরই একজন!
বাঁধন ছিঁড়ে তোমায় টানে
অন্য পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ!

শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮

শোনো

শোনো,
দুঃখবিলাসী এক হৃদয়ের গল্প শোনো
বদলে যাওয়ার সূত্র চোখে আঁকা,
অনুশোচনার মানে নেই কোনো!

শোনো,
শূন্য জলের গ্লাসের শব্দ,
রোষানলে কাঁপছে চিবুক
হাত ফসকে হারিয়ে যাওয়া, সন্ধ্যেরা আজ
ব্যথার অনলে পুড়ুক
উড়ে যাও তুমি
থাকবে না হৃদয়ের পিছুটান, জেনো!
বদলে যাওয়ার সূত্র চোখে আঁকা,
অনুশোচনার মানে নেই কোনো!

শোনো,
ভুল নিয়মের অংকে ভরা, আজ
জীবনের অধ্যায়।
আবছায়া রাত জেগে থাকে, ভাবনাগুলো
অচেনা বিষণ্ণতায়।
দূরে যাও তুমি
একদিন এভাবেই দেয়ালচিত্র হবে পুরোনো!
বদলে যাওয়ার সূত্র চোখে আঁকা,
অনুশোচনার মানে নেই কোনো!


বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ, ২০১৮

এই যে চেনা পথের ধুলো

এই যে চেনা পথের ধুলো তোমার কথা বলে,
এমন হাজার রাত কাটে রোজ ভাবনার দখলে।
তোমার নামে বাড়ে আমার ছোট গল্পের ঝুলি,
পরিচিত মুখ এঁকে দিয়ে যায় স্বপ্নের রঙ-তুলি।
সে মুখ আমার বুকের ভেতর বাড়ায় প্রেমের তেষ্টা,
গল্পের পথে হেঁটে চলি তাই দেখবো বলে শেষটা।।

কেউ আসে হায় এক লহমায়, ব্যবধান ভেঙে দিতে,
চেনা অবয়ব দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার বিপরীতে।
ফিকে কিছু ইচ্ছে অপার ফিরে আসে ঠিকানায়,
জেনো আমার স্বপ্ন শুরু, সন্ধ্যা যেখানে থেমে যায়।
স্বপ্নেই চলে তোমার মাঝে হারিয়ে যাওয়ার চেষ্টা,
ঘুমরঙে রোজ পিছু নিই তার দেখবো বলে শেষটা।।

ছুঁয়ে থাকা হাত দূরে যায় যদি, অভিমান জমে থাকে,
ছেঁড়া কাগজের কবিতারা তার ডাক নাম ধরে ডাকে।
তুমি, তুমি ঘোরে দিন কাটে, ডুবি তোমার শূন্যতায়,
কার্নিশে থাকা পুরোনো স্মৃতি, তোমারই তো গান গায়।
সেই তুমি চলে যাও, রেখে যাও স্পর্শের রেশটা,
আমিও ছুটি তোমার পথেই দেখবো বলে শেষটা।।

যৌথ আয়োজন

এ রাতের স্বপ্নেরা এলোমেলো,
এ পথ ঢেকে দেয় ধূসর ধুলো।
কংক্রিট শহর জুড়ে
নেমে আসে অসময়ের ঘুম।
ব্যথার আঁচড় কাটে বুকে,
ভেস্তে যাওয়া তোমার আমার
যৌথ আয়োজন।।

জোনাকিরা ভুলেই গেছে,
একান্ত আমাদের হতে।
কাটাকুটি খেলার, কাটছে জীবন
কষ্টের ইমারতে।
একলা আমার শহর জুড়ে
আসে এ কোন ফাগুন!
ব্যথার আঁচড় কাটে বুকে,
ভেস্তে যাওয়া তোমার আমার
যৌথ আয়োজন।।

সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

প্রশ্ন

যদি সময়ের হাত ধরে, প্রিয় গল্পের আবদারে
হঠাৎ কোনদিন এসে বলি
এখনো ভালোবাসি
তবে কি বিশ্বাস করবে তুমি?
নাকি চেনা অভিমানে দূরে সরে যাবার বাহানায়,
বলবে
এভাবেই কত রাতের দেখা স্বপ্নগুলো
বিলীন হয়ে গেছে ভোরের আলোয়
কখনো তার হিসেব রাখা হয় নি অংকের খাতায়

যদি বাঁধনহারা ইচ্ছেগুলোকে প্রশ্রয় দিয়ে
আবার কোনদিন এসে বলি
তোমায় নিয়ে একটা কবিতা লিখেছি
তবে কি সেই কবিতা পড়তে চাইবে তুমি?
নাকি ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসির ফোয়ারা তুলে,
বলবে
এভাবেই রোজ কত কবিতার শবদেহ
পড়ে থাকে শহরতলির রাজপথে!
কখনো তার ঠাঁই পাওয়া হয় না খবরের শিরোনামে।

বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো

গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো!
অনির্বাণ সবুজে নিরন্তর কলেজ ক্যাম্পাস।
তুমি, আমি আর ধোঁয়া ওঠা দুকাপ চা
তারপর
গল্পের ছলে তোমার চোখে চোখ রেখে,
বেখেয়ালী মনে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেয়া।

গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো!
আবছা নীলে ঢাকা শেষ বিকেলের আকাশ
তুমি, আমি আর হুড খোলা রিকশা।
তারপর...
তীব্র জ্যাম বাঁধা রাস্তায় পাশাপাশি বসে,
আনমনা হয়ে কিছুটা সময় পার করা।

গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো!
মায়াবতী দিঘির জলে রুপোলী চাঁদের ছায়া
তুমি, আমি আর ছোট্ট ডিঙি নাউ
তারপর...
ভালোবাসার উষ্ণতায় তোমার কোলে মাথা রেখে,
ইচ্ছাকৃত সারাটা জীবন কাটিয়ে দেয়া।
গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারতো!

বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮

মৃত্যুর প্রহর গুনছি

আমার ভালোবাসা জুড়ে বাসা বেঁধেছে লিউকেমিয়া!
ভালোবাসার রক্তে অবিশ্বাসের শ্বেত কণিকাগুলো
অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে!
তোমার জন্যে থাকা অনুভবের অস্তিত্বগুলো
আজ মরণের পথে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে
মৃত্যুর প্রহর গুনছি।
তবুও আমি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালোবাসাকে বাঁচানোর।
কেমোথেরাপী, রেডিয়েশন থেরাপী অথবা স্টেম সেল
কিছুই বাদ যায়নি!
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে
প্রেম নামক ডাক্তাররা বলেই দিয়েছে,
আয়ু বড়জোর তিনমাস!



বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০১৮

স্বপ্ন সিঁড়ি মেয়ে

কোনো এক সবুজ গাঁয়ের চঞ্চলা এক মেয়ে,
নিঝুম রাতে ক্লান্ত চোখে স্বপ্ন সিঁড়ি বেয়ে।
চললো ছুটে অচিন পথে ফুল পাখিদের নিয়ে,
কাঠবেড়ালির সঙ্গে দিলো পুতুল সোনার বিয়ে
হাজার হাজার পাখি এলো বিয়ের নিমন্ত্রণে,
গান শুনিয়ে প্রাণ জুড়ালো কোকিল পরক্ষণে।
সেই আসরে সবুজ টিয়া দেখালো তার নাচ,
একে ওকে প্রশ্ন করাই শেয়াল মামার কাজ!
টিকটিকিরা মিলে সবাই ধরলো জারি গান,
আবার যেন সেই আসরে ফিরলো গানের প্রাণ।
ফুলগুলো সব এলো চুলে দুললো হাওয়ার দোলে,
মুচকি হেসে মুখ লুকালো ফড়িং ঘাসের কোলে।
স্বপ্ন খেয়ায় ধীরে ধীরে হারালো সেই রাত,
প্রজাপতির পাখায় চড়ে ফিরেছে প্রভাত।
চঞ্চলা সেই মেয়ে তখন ভোরের পাখির ডাকে,
এক নিমিষেই ফিরে এলো স্বপ্নের দেশ থেকে।